
বুচা শহরে একটি গির্জার স্যাটেলাইট ইমেজ। ছবি : ডয়চে ভেলে
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ছেড়ে পিছু হঠেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। তারপরেই যুদ্ধের ভয়াবহতার ছবি ক্রমশ স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। কিয়েভ থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে বুচা শহরে একটি গির্জার পাশে ৪৫ ফুট দীর্ঘ পরিখায় গণকবর শনাক্ত হয়েছে।
স্থানীয় সময় গতকাল রোববার স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করে এমন দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মহাকাশ প্রযুক্তি কোম্পানি মাক্সার টেকনোলজিস।
গত শনিবার (এপ্রিল) রয়টার্সের সাংবাদিকেরা বুচা শহর পরিদর্শন করেছেন। তারা বলেন, একটি গির্জা এলাকায় শনাক্ত হওয়া গণকবর এখনো উন্মুক্ত অবস্থায় আছে। সেখানে দেখা গেছে, লাল কাদামাটি ভেদ করে মানুষের হাত-পা বের হয়ে আছে।
নতুন স্যাটেলাইট চিত্রে মাক্সার টেকনোলজিস বলেছে, সেন্ট অ্যান্ড্রু অ্যান্ড পেয়ারভজভান্নোহো অল সেইন্টস গির্জায় গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায় গত ১০ মার্চ। আর গত ৩১ মার্চ দেখা গেছে, গির্জা এলাকার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে প্রায় ৪৫ ফুট দীর্ঘ পরিখাযুক্ত একটি সমাধিস্থল রয়েছে।
তবে মাক্সার প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্রগুলো তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করা যায়নি।

ইউক্রেনে গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ওই কবর থেকে যাদের দেহ উদ্ধার হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই সাধারণ মানুষ। সেনা নয়। তাদের শরীরে অত্যাচারের স্পষ্ট চিহ্ন আছে। পিছন থেকে তাদের মাথায় গুলি করা হয়েছে বলেও বোঝা যাচ্ছে।
ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার নেতাদের এই ছবি দেখাতে চাই। তারা জানুন কী ভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা হচ্ছে। এই খুন, এই অত্যাচার, রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা মানুষ ও অস্ত্র... এর দায় কার?’
রাজধানী কিয়েভের আশপাশের এলাকা থেকে রুশ বাহিনী সরে যাওয়ার পর বুচা শহরে ৪১০টি মৃতদেহের সন্ধান পেয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। রাশিয়ার সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে তদন্ত শুরু করতে গিয়ে এসব মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছে তারা।
গত শনিবার কিয়েভের আশপাশের এলাকা থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহার করা হয়। এরপর শহরগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচার শুরু হয়। রাজধানী কিয়েভের পার্শ্ববর্তী বুচা শহরের মেয়র বলেছেন, চেচেন যোদ্ধারা এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ করার সময় রাশিয়ান বাহিনীর হাতে ৩০০ জন বাসিন্দা নিহত হয়েছেন।
তবে বুচায় বেসামরিক লোকদের হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। মস্কো বলেছে, সেখানকার কোনো বাসিন্দাই রাশিয়ান বাহিনীর সহিংসতার শিকার হয়নি।
উল্টো এ বিষয়ে কিয়েভকে দোষারোপ করে রাশিয়া বলছে, পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম ব্যবহার করে উসকানিমূলক সংবাদ ছড়াচ্ছে ইউক্রেন। -ডয়চে ভেলে, রয়টার্স